ত্বক ভালো রাখার সর্ব উপায় বার্ধক্য নয় যৌবন সর্বময়
স্বাস্থ্য ঠিক রাখার জন্য আমাদের যেমন সর্বদা সতর্ক থাকতে হয় ঠিক তেমনি স্বাস্থ্যের মতোই ত্বক ভালো রাখার জন্য আমাদেরও সর্বদা খেয়াল রাখতে হবে। একটি সুন্দর ত্বক সবার কাছে অনেক প্রিয় হয়ে ওঠে। তাই আমাদের সর্বদা খেয়াল রাখতে হবে ত্বককে কিভাবে উজ্জ্বল, মসৃণ রাখা যায় । সময়ের সাথে সাথে বাড়তে থাকে বয়স আর ছাপ পড়ে ত্বকে । দিনে দিনে এই সমস্যাটা বাড়তে থাকে কিন্তু আমাদের সামান্য কিছু খাদ্যাভ্যাস পরিবর্তন করলে এর বয়সের ছাপ কমানো সম্ভব । তাই আর প্রসঙ্গ না বাড়িয়ে আসুন জেনে নেই ত্বক ভালো রাখার সর্ব উপায় বার্ধক্য নয় যৌবন সর্বময়।
সূচিপত্রঃ ত্বক ভালো রাখার সর্ব উপায় বার্ধক্য নয় যৌবন সর্বময়।
- ত্বক কি
- ত্বক ভালো রাখার ঘরোয়া উপায়
- উজ্জল ত্বকে খাদ্যাভাসে পরিবর্তন
- যে খাবারে ত্বক উজ্জ্বল এ সহায়তা করে
- শেষ কথা
ত্বক কিঃ ত্বক হল মেরুদন্ড প্রাণীর বাহিরের একটি বৃহৎ অংশ। এটি দেহী কে আবৃত করে রাখে । এটি প্রাণীর ভেতরের অংশটাকে সুরক্ষা দেয়। এটি মানবদেহের সবচেয়ে বড় অঙ্গ। বিভিন্ন রোগ সৃষ্টিকারী জীবানু বিরুদ্ধে ত্বক ব্যাপক ভূমিকা পালন করে ।
ত্বক ভালো রাখার ঘরোয়া উপায়ঃ প্রতিদিন আমরা বিভিন্ন কাজের প্রয়োজনে বাইরে বের হই ঘর থেকে বাইরে বের হওয়ার আগে যত দূর সম্ভব শরীরকে কাপড়ে ঢেকে বের হওয়া ভালো। গ্রীষ্মের প্রখর রৌদ্রে চোখে সানগ্লাস পরা ভালো। ঘুরে আসার পর ভালো করে ঠান্ডা পানি দিয়ে মুখ ধুয়ে ফেলুন প্রয়োজনে মুখের সাথে খাপ খাওয়ায়ে ফেসওয়াশ ব্যবহার করতে পারেন। তাছাড়া প্রতিদিন ঠান্ডা পানি দিয়ে দুইবার মুখ পরিষ্কার করবেন।
মুখ পরিষ্কার করোঃ প্রতিদিন কমপক্ষে দুইবার ঠান্ডা পানি দিয়ে মুখ পরিষ্কার করাপ্রয়োজন বেশি ক্ষারীয় সাবান ব্যবহার না করা ভালো গ্লিসারিন সমৃদ্ধ সাবান ব্যবহার করতে হবে
মধুঃ মধুর গুনাগুন অনেক বেশি। মধু জীবনু প্রতিরোধ করে ত্বকের আর্দ্রতা ধরে রাখতে সাহায্য করে ।ব্রণ ও তৈলাক্ত ত্বকের উপর মধু লেপন করুন । প্রায় আট থেকে দশ মিনিট পর ভালোভাবে শুকিয়ে গেলে পানি দিয়ে মুখ পরিষ্কার করুন।
আরও পড়ুনঃএলোভেরা জেল ত্বকে ব্যবহারের নিয়ম
ব্লটিং পেপারঃ ব্লটিং পেপার হলো পাতলা কাগজের মত যা আপনার ত্বক থেকে অতিরিক্ত তেল শুষে নিয়ে আপনার ত্বক কে সুরক্ষা দেয়। যখন আপনার ত্বকে তৈলাক্ত ভাব আসবে তখন আপনাকে অস্বস্তি তে ফেলবে। সে সময় আপনি এটা প্রয়োজন মত ব্যবহার করতে পারেন।
কাজুবাদামঃ ত্বকের জন্য জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ একটি উপাদান । কাজুবাদাম এর গুঁড়ো ত্বকের কোষ কে পরিষ্কার করে । অতিরিক্ত তৈলাক্ত ত্বকের তেল শুষে নিয়ে সুন্দর ও মসৃণ ত্বক তৈরিতে সাহায্য করে। কাঁচা বাদামের গুড়া তিন চামচ 2 টেবিল চামচ মধু একত্রে মিশিয়ে মুখে লেপন করুন । তারপর শুকিয়ে যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে সহনীয় গরম পানিতে ধুয়ে ফেলুন। কিন্তু যাদের বাদামে এলার্জি আছে তাদের জন্য ব্যবহার না করাই ভালো।
টমেটোঃ ত্বক উজ্জ্বল ও টানটান রাখতে টমেটো গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। টমেটোর রস ত্বকে লাগান তারপর আধাঘন্টা পর ধুয়ে ফেলুন । টমেটো চাকা চাকা করে কেটে তাকে ঘষতে পারেন। তাছাড়া বিভিন্ন ফ্রেস প্যাক ও টমেটোর রস ব্যবহার করা যায়।
দই ও মধুঃ দই ও মধু ব্যবহারে ত্বক কে উজ্জ্বল করে তোলে। দই ও মধু একত্রে মিশিয়ে ত্বকে লাগান ত্বক উজ্জ্বল হবে ।
দুধঃ দুধের ভিতর তুলা ডুবিয়ে সেই তুলা ত্বকের উপর চেপে চেপে লাগান দেখবেন লোমকূপের ভিতর থেকে ময়লা দূর করবে তেমনি ত্বক হবে উজ্জ্বল ও নরম।
আরও পড়ুনঃমুখের কালচে ভাব দূর করার উপায়
হলুদ ও আখের রসঃ হলুদ ও আখের রস ত্বককে সুন্দর রাখতে সাহায্য করে। এক চামচ হলুদ এর গুড়া এবং এক দুই চামচ আখের রস নিন। হলুদের গুঁড়ো ও আখের রস একত্রে মিশিয়ে মুখের লাগান এভাবে ১০-১৫ মিনিট রেখে দেন তারপর হালকা গরম জল দিয়ে ধুয়ে ফেলুন।
নারিকেল তেলঃ যুগ যুগ ধরে রূপচর্চায় নারকেল তেলের ব্যবহার চলে আসছে। নারকেল তেল মুখ ,চোখ ও ঠোঁটের আশেপাশে গলায় ভালো করে আলতো ভাবে মালিশ করে নিন। সারা রাত রেখে দিন পর দিন সকালে জল দিয়ে মুখ ধুয়ে ফেলুন। নারিকেল তেল বলিরেখা দূর করে এবং ত্বককে উজ্জ্বল করে তোলে।
উজ্জ্বল ত্বকে খাদ্যাভ্যাস পরিবর্তনঃ উজ্জল ত্বকের জন্য কিছু খাদ্য অভ্যাস পরিবর্তন করা আমাদের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। তাই বহুল পরিচিত কিছু খাবার আপনাদের সামনে তুলে ধরলাম।
কমল পানীয়ঃ শরীরকে চাঙ্গা করতে মনকে উৎফুল্ল করতে অনেকেই এ কোমল পানীয় বেছে নেন যদিও এটি সাময়িক ভালো লাগে কিন্তু ক্ষতি হয় দীর্ঘস্থায়ী। কোমল পানিতে থাকে অতিরিক্ত পরিমাণে চিনি। এতে থাকা এসিড দাঁতের জন্য খুবই ক্ষতিকর । এছাড়া এটি ফ্যাটের অন্যতম কারণ ।যা সরাসরি শরীরে প্রভাব পড়ে।
ভাজাপোড়া খাবারঃ শরীর সুস্থ রাখতে ভাজা পোড়া খাবার থেকে যত দূরে থাকা যায় ততই মঙ্গল। যদিও এটি আমাদের জন্য খুবই মুখরুচি। এ খাবারে থাকে প্রচুর পরিমাণে অস্বাস্থ্যকর ফ্যাট। যা অতিরিক্ত খেলে এই খাবারটা ত্বকের জন্য খুবই ক্ষতিকারী।
আরও পড়ুনঃslim fit green coffee খাওয়ার নিয়ম
অতিরিক্ত মসলাযুক্ত খাবারঃ অতিরিক্ত মসলাযুক্ত খাবার শরীরের জন্য খুবই ক্ষতিকর । অতিরিক্ত মসলাযুক্ত খাবার হজমের সমস্যা করে তেমনি সুন্দর ও মসৃণ ত্বক তৈরিতে অনেক সমস্যা তৈরি করে। তাই এটি আমরা সর্বদাই এড়িয়ে চলব।
ঝলসানো মাংসঃ মাংসের ঝলসে তৈরি করা হয় বারবিকিউ কিম্বা কাবাব । যা শরীরের জন্য খুব ক্ষতিকর। বেশিরভাগ ক্ষেত্রে দেখা যায় এটা ঠিকমতো রান্না হয় না মাঝেমধ্যে কাঁচা থেকে যায়। আবার গ্রিল কিংবা কাবাবের উপর মাংস খুব বাজে ভাবে পুড়ে যায় এসব মাংস শরীরকে ভেঙে ফেলে। যার শরীরে বার্ধ্যকের ছাপ বয়ে আনে। তাই আমরা এ খাবার থেকে যতদূর সম্ভব এড়িয়ে চলব।
যে খাবারে ত্বক উজ্জলের সহায়তা করেঃ সবাই চায় সুন্দর একটি ত্বক কিন্তু আমরা অনেক সময় নামি দামি কসমেটিক্স ব্যবহার করে ত্বকের সৌন্দর্য ঠিক রাখতে পারি না এর জন্য দরকার হয় প্রয়োজনীয় খাবার যা খেলে আপনার ত্বক উজ্জ্বল মসৃণ হতে পারে। নিম্নে কিছু আলোচনা করা হলো।
পানিঃ একটি সুন্দর ত্বকের জন্য অবশ্যই প্রচুর পরিমাণে পানি পান করতে হবে। পর্যাপ্ত পরিমাণ পানি খেলে ত্বকে সৌন্দর্য বৃদ্ধি পায় । শরীরে পানির পরিমাণ কমে গেলে নানা সমস্যা সৃষ্টি হয় তাই প্রতিদিন আমাদের চার থেকে পাঁচ লিটার পানি পান করা প্রয়োজন।
শাকসবজিঃ সুন্দর স্বাস্থ্যের পাশাপাশি ত্বককে ভালো রাখতেও বেশি পরিমাণ সবজি খাওয়া প্রয়োজন। শাকসবজিও ত্বকের জন্য বেশ উপকারী।
এছাড়াও বাদাম, টমেটো, মধু, দুধ ,ডিম এগুলো ঠিকঠাক মতো খেলে আমাদের ত্বক সুন্দর ,উজ্জ্বল ও মসৃণ হবে।
শেষ কথাঃ পরিশেষে আমরা বলতে পারি স্বাস্থ্যের পাশাপাশি ত্বকের যত্নটা নেওয়া খুবই গুরুত্বপূর্ণ। সঠিক সময়ে ত্বকের গুরুত্ব না নিলে যৌবনে বার্ধক্যের ছাপ নেমে আসবে । যা জীবনে একটি খুব বাজে অনুভূতি। তাই আমরা সর্বদা চেষ্টা থাকব আমাদের ত্বককে সুন্দর উজ্জ্বল ও মসৃণ রাখার জন্য যা জীবনে খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এতক্ষন আমাদের সাথে থাকার জন্য অসংখ্য অসংখ্য ধন্যবাদ। ভাল থাকুন। সুস্থ থাকুন। নিরাপদে থাকুন ।পুষ্পিতা আইটির সাথে থাকুন। ধন্যবাদ।।
অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url