OrdinaryITPostAd

দুর্গাপূজা সম্পর্কে জানা অজানা কিছু তথ্য

কোটি বাঙ্গালীর প্রাণের উৎসব এ দুর্গাপুজো । ধুপ, ধুনো ,শঙ্খ বাজিয়ে মাকে বরণ করে নিলাম লাখো কোটি বাঙ্গালির প্রাণে ।স্বভাবত বছরে এ পূজা দুইবার হয়ে থাকে । শরৎকালে অর্থাৎ আশ্বিন মাসে যে পূজো হয় তা শারদীয় দুর্গাপূজা নামে পরিচিত । আবার বসন্তকালে অর্থাৎ চৈত্র মাসে যে পূজা হয় সেটা বাসন্তী পূজা নামে পরিচিত। কিন্তু পরিচিতি ও জনপ্রিয়তার দিক থেকে শারদীয় দুর্গাপূজাই অনেকটাই এগিয়ে । আজ আমরা জানবো দুর্গাপূজার আদ্যপ্রান্ত । সকলকে জানাই শারদীয় শুভেচ্ছা।



  • বিস্তারিত শুরুর আগে সূচিপত্র এক নজরে দেখে নেই
      •   প্রথম দুর্গাপূজা  কে করেন?
      •   ২০২৩ সালের দূর্গা পূজার সময়সূচী 
      •   কেন এটা অকালবোধন পূজা
      •   কেন শারদীয় দুর্গাপূজা
      •   কলাবউ      
      •   কুমারী পূজা     
      •    সন্ধি পূজা
      •   শেষ কথা

প্রথম দুর্গাপূজা  কে করেন:  তাহিরপুর রাজবংশের রাজা ছিলেন ইতিহাসখ্যাত কংস নারায়ণ রায়। ৮৮৭ বঙ্গাব্দের আশ্বিন মাসের মহাষষ্ঠী তিথিতে অকালবোধনের মাধ্যমে কংস নারায়ন দেবী দুর্গার প্রতিমা গড়ে প্রথম দুর্গা পূজা করেন । কংস নারায়ণের প্রথম দুর্গা পূজা টি হয়েছিল রাজবাড়ী সংলগ্ন প্রথম ফটকের পাশেই  একটি বেদীতে।

২০২৩ সালের দূর্গা পূজার সময়সূচীঃ ২০২৩ সালের দূর্গা পূজার সময়সূচী সংক্ষেপে প্রদান করা হলো।

      •   মহালয়া ২৬ শ্রাবণ অর্থাৎ ১৪ই অক্টোবর শনিবার
      •  মহাষষ্ঠী ২ কার্তিক অর্থাৎ ২০ অক্টোবর শুক্রবার
      •  মহা সপ্তমী ৩ কাত্তিক অর্থাৎ ২১ অক্টোবর শনিবার 
      • মহা অষ্টমী ৪ কার্তিক অর্থাৎ ২২ শে অক্টোবর রবিবার 
      • মহা নবমী ৫ কার্তিক অর্থাৎ ২৩ শে অক্টোবর সোমবার
      •  বিজয়া দশমী ৬ কার্তিক অর্থাৎ ২৪অক্টোবর মঙ্গলবার 


 কেন এটা অকালবোধন পূজা:ত্রেতা যুগে  ভগবান শ্রী রামচন্দ্র অকালে দেবীকে আরধনা করেছিলেন লঙ্কা জয় করে সীতাকে উদ্ধারের জন্য  । শরৎকালে শ্রীরামচন্দ্র অকালে অসময়ে পূজা করেছিলেন বলে এই শরতের পূজাকে দেবীর অকাল অবদান বলা হয়। সনাতন ধর্মে কোন শুভ কাজ করতে গেলে সমগ্র জীবজগতের জন্য তর্পণ করতে হয়। যার অর্থ অঞ্জলি প্রদান করা মানে খুশি করা। ভগবান শ্রীরামচন্দ্র লঙ্কা বিজয়ের আগে এ দিনে এমনই করেছিলেন।

কেন শারদীয় দুর্গাপূজাঃ ব্রহ্মার  আদেশে রাম শরৎকালে পার্বতী দুর্গতিনাশিনী রূপে বোধন  চণ্ডীপাঠ ও মহা পূজার আয়োজন করেন। আশ্বিন মাসের শুক্লা ষষ্ঠীর দিন রাম কল্প রম্ভ করেন তারপর সন্ধ্যায় বোধন আমন্ত্রণ ও অধিবাস করেন এরপর  মহা সপ্তমী  মহা অষ্টমী মহানবমী ও সন্ধি পূজার পরেও দেবীদুর্গার আবির্ভাব ঘটায় । এছাড়া শ্রীরাম চন্দ্র ১০৮টি নীল পদ্ম দিয়ে মহানবমী পূজার পরিকল্পনা করেন । আর এই  পূজাটি শরৎ কালে হয় বলেই এটা শারদীয় দুর্গাপূজা

কলা বউঃ একটি কলাগাছের সঙ্গে  আটটি স্বপত্র উদ্ভিদ একসাথে করে তাতে দুইটি বেল পাতা, সাদা অপরাজিতা লতা দিয়ে বেঁধে লাল পাড় সাদা শাড়ি পরিয়ে ঘোমটা দিয়ে বধূর রুপে তৈরি করে সিঁদুর পরিয়ে দেবী দূর্গা প্রতিমার ডান পাশে রাখা হয়। যা কলা বউ নামে পরিচিত । মহা সপ্তমীর দিন সকালে  কলাবউকে স্নান করানোর পর নতুন শাড়ি পড়ানো হয়। তারপর পূজা মন্ডপে নিয়ে এসে দেবীর ডান পাশে একটি কাঠের সিংহাসনে স্থাপন করা হয়। এই কলা বউকে আবার আমরা নবপত্রিকা বলে থাকি। এর আসল নাম নবপত্রিকা।

কুমারী পূজাঃ  প্রতিটি দুর্গাপূজায় কুমারী পূজা করা হয় । সব নারীরা যে মায়ের রূপ  এই বিশ্বাসকে  হৃদয়ে  ধারণ করে অষ্টমীর দিন এই কুমারী পূজা করা হয় । শাস্ত্র মতে  অনধিক ১৬ বছরের  অ-রজঃস্বলা কুমারী মেয়ের পূজা করা হয় । আরো পরিষ্কার করে বলা যায় হিন্দু তন্ত্র শাস্ত্র মতে ষোলো বছরের কম বয়সী এমন কন্যা যার আদ্য ঋতুস্রাব হয়নি এবং পুরুষ সংসর্গে যোনি বিদীর্ন হয়নি এমন কন্যাকে দুর্গার দেবীর প্রতীকে পূজা করার নাম হলো কুমারী পূজা। জানা যায় ১৯০১ সালে ১৮ই অক্টোবর স্বামী বিবেকানন্দ দুর্গাপূজার অষ্টমী তিথীতে কুমারী পূজার প্রবর্তন করেন। বর্তমানে কুমারী পূজার প্রচলন অনেকটা কমে গেছে।

চিত্রঃ কুমারী পূজা


কুমারী পূজায় বিভিন্ন বয়সের কন্যাকে পূজা করা হয়। যা ভিন্ন ভিন্ন নামে পরিচিত।
 যথাঃ
  1.  এক বছরের কন্যা  সন্ধ্যা নামে পরিচিত
  2.  দুই বছরের কন্যা সরস্বতী নামে পরিচিত
  3.  তিন বছরের কন্যা ত্রিধা মূর্তি নামে পরিচিত
  4.  চার বছরের কন্যা কালিকা নামে পরিচিত
  5. পাঁচ বছরের কন্যা সুভগা নামে পরিচিত
  6.  ছয় বছরের কন্যা  উমা নামে পরিচিত
  7. সাত বছরের কন্যা মালিনী নামে পরিচিত
  8.  আট বছরের কন্যা কুব্জিকা নামে পরিচিত
  9. নয় বছরের কন্যা কালসন্দর্ভা বা নামে পরিচিত
  10. দশ বছরের কন্যা অপরাজিতা নামে পরিচিত
  11. এগারো বছরের কন্যা রুদ্রানী নামে পরিচিত
  12.  বারো বছরের কন্যা ভৈরবী নামে পরিচিত
  13. তেরো বছরের কন্যা মহালক্ষী নামে পরিচিত
  14. চৌদ্দ বছরের কন্যা পীঠ নায়িকা নামে পরিচিত
  15. পনেরো বছরের কন্যা  ক্ষেত্রজ্ঞা নামে পরিচিত
  16. এবং ষোলো বছরের কন্যা অম্বিকা বা অন্নদা নামে পরিচিত
সন্ধি পূজাঃ দুর্গা পূজার আরেকটি গুরুত্বপূর্ন অংশ হলো সন্ধি পূজা। মহা অষ্টমী ও মহা নবমীর সন্ধিক্ষণে এই পূজা করা হয় তাই একে বলা হয় সন্ধি পূজা। অর্থ্যাৎ এ বিশেষ পূজা করা হয় ৪৮ মিনিটের । এ পূজা অষ্টমী তিথীর শেষ চব্বিশ মিনিট এবং নবমী তিথির প্রথম ২৪ মিনিট অর্থাৎ ৪৮ মিনিটের মধ্যে এই পূজা করা হয় । অষ্টমী ও নবমীর সংযোগস্থলে করা হয়  সন্ধি পূজা । এ পূজায় দেবীকে চামুণ্ডা রূপে পূজা করা হয়।


শেষ কথাঃ সর্বোপরি সবার জীবনে দুর্গাপূজা বয়ে আনুক সুখ-শান্তি। দুর্গাপূজা প্রতিটি  বাঙালির  প্রাণের উৎসব। এক আনন্দের সময় । প্রতি বছরের ন্যায় দুর্গাপূজা আমাদের জীবনে বয়ে আনুক অনাবিল সুখ ও শান্তি । সবাইকে জানাই দুর্গাপূজার প্রীতি শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন। সকলকে ধন্যবাদ জানিয়ে এখানেই শেষ করছি আজকের আলোচ্য বিষয়। শরীরের যত্ন নিবেন। ভালো থাকবেন ।পুষ্পিতা আইটির সাথে থাকবেন।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url

এইটা একটি বিজ্ঞাপন এরিয়া। সিরিয়ালঃ ১

এইটা একটি বিজ্ঞাপন এরিয়া। সিরিয়ালঃ ২

এইটা একটি বিজ্ঞাপন এরিয়া। সিরিয়ালঃ ৩

এইটা একটি বিজ্ঞাপন এরিয়া। সিরিয়ালঃ ৪