ম্যালেরিয়া জ্বরের লক্ষণ, প্রতিকার ও চিকিৎসা
পেজ সূচীপত্রঃ ম্যালেরিয়া জ্বরের লক্ষণ, প্রতিকার ও চিকিৎসা পদ্ধতি বিস্তারিত
ম্যালেরিয়া জ্বরের লক্ষণ
ম্যালেরিয়া রোগের জন্য দায়ী ‘প্লাজমোডিয়াম’ নামক এক ধরনের জীবাণু। কোন লক্ষণগুলো দেখা দিলে বুঝবেন যে কেউ ম্যালেরিয়া জ্বরে আক্রান্ত? চলুন ম্যালেরিয়া জ্বরের লক্ষণ, প্রতিকার ও চিকিৎসা সম্পর্কিত আজকের আলোচনার এ পর্যায়ে, আমরা দেখে নিই ম্যালেরিয়া জ্বরের লক্ষণগুলো আসলে কি কি?
- তীব্র জ্বর ম্যালেরিয়া রোগের অন্যতম লক্ষণ।
- নির্দিষ্ট সময় পর পর শরীরে কাঁপুনি দিয়ে জ্বর আসে। জ্বরের সময় শরীরের তাপমাত্রা ১০৪-১০৬ পর্যন্ত উঠতে পারে। তবে জ্বর ছেড়ে গেলে শরীরের তাপমাত্রা আগের থেকেও কমে আসতে পারে।
- এই রোগের আর একটি লক্ষণ হলো মাথাব্যাথা করা। এক্ষেত্রে, মাথাব্যাথা কম বা বেশি হতে পারে।
- শরীরে খিঁচুনি অনুভব হতে পারে।
- অনেক সময় কোষ্টকাঠিন্যও দেখা দিতে পারে।
- ঘুমের পরিমাণ কমে যেতে পারে।
- শরীরে ক্লান্তি আসতে পারে। মাংশপেশীতে ব্যথা অনুভব হতে পারে।
- রক্তশূন্যতা দেখা দেওয়ারও সম্ভাবনা রয়েছে।
- অনেক সময় কিছু মেয়ের ক্ষেত্রে ম্যালেরিয়া জ্বর শাসকষ্টেরও সৃষ্টি করতে পারে।
ম্যালেরিয়া প্রতিরোধের উপায় কিংবা সঠিক চিকিৎসা পদ্ধতি সম্পর্কে না জানলে সমস্যা গুরুতর আকার ধারণ করতে পারে। তাই উপরে উল্লেখিত লক্ষণগুলো দেখা দিলে প্রাথমিক চিকিৎসার পাশাপাশি চিকিৎসকের শরণাপন্ন হওয়ার দরকার। ম্যালেরিয়া জ্বরের লক্ষণ, প্রতিকার ও চিকিৎসা মোটেই কোন জটিল বিষয় নয়। একটু সতর্ক থাকলেই আমরা এই ভয়াবহ রোগ থেকে বেঁচে যেতে পারি।
আরো পড়ুনঃ ফেসবুকে অটো লাইক পাওয়ার উপায়
এখনো পর্যন্ত ম্যালেরিয়া জ্বরের কোন কার্যকর টিকা আবিষ্কৃত হয় নাই। তাই আমাদের প্রতিকার ও প্রতিরোধ ব্যবস্থা গ্রহন করা উচিত। অন্যথায়, বিপদ অনিবার্য। তাহলে চলুন জেনে নিই ম্যালেরিয়া প্রতিরোধে আমাদের কি কি সচেতনতা গ্রহন করা উচিত?
ম্যালেরিয়া প্রতিরোধের উপায়
আমাদের সচেতনায় কিন্তু ম্যালেরিয়া প্রতিরোধে বিশেষ ভূমিকা পালন করে। আমাদের সাবধানে নিচের বিষয়গুলোর প্রতি নজর দেয়া দরকার।
- সাধারণত মে মাস থেকে অক্টোবর মাসে এই রোগের প্রাদুর্ভাব বেশি দেখা যায়। তাই এই মৌসুমে আমাদের লম্বা হাতার জামা-কাপড় পরিধান করা উচিত।
- যে সকল এলাকায় ম্যালেরিয়া ছড়ানোর সম্ভাবনা রয়েছে সে সকল এলাকায় অতিরিক্ত সাবধানতা অবলম্বন করতে হবে।
- যেহেতু এই রোগটি মশার মাধ্যমে হয়ে থাকে তাই ঘুমানোর পূর্বে আমাদের মশারি ব্যবহার করা দরকার।
- প্রয়োজনে মশা নিরোধক স্প্রে ব্যবহার করা যেতে পেরে।
- ঘরের আশে-পাশে যে সকল জায়গায় পানি জমার সম্ভাবনা রয়েছে সেই জায়গাগুলোতে অপ্রয়োজনীয় পানি যেন না জমে সেদিকে নজর দিতে হবে। প্রয়োজনে, ম্যালেরিয়া জ্বরের লক্ষণ, প্রতিকার ও চিকিৎসা সংক্রান্ত বাসা-বাড়ি পরিস্কারের বিষয়টি নিশ্চিত করার জন্য স্থানীয় স্বাস্থ্য কর্মীদের সহায়তা নিন। তাদের পরামর্শ গ্রহন করুন।
- ম্যালেরিয়া প্রবণ এলাকা থেকে দূরে থাকার চেষ্টা করতে হবে।
আপনি যদি ম্যালেরিয়া নামক মারাত্মক রোগের হাত থেকে বাঁচতে চান তবে এই প্রতিরোধ ব্যবস্থাগুলোর প্রতি বিশেষ গুরুত্ব দিন। আর এই বিষয়গুলোর প্রতি গুরুত্বারোপ করলে আশা করা যায়, ম্যালেরিয়া জ্বরের লক্ষণ, প্রতিকার ও চিকিৎসার জটিলতা অনেকাংশেই কমে আসবে। ফলে, আপনি, আমি ও আমরা সকলেই এই ভয়াবহ রোগ থেকে সুরক্ষিত থাকবো।
ম্যালেরিয়া জ্বরের প্রতিকার
উপরের আলোচনা থেকে আমরা নিশ্চয় বুঝতে পারছি যে, ম্যালেরিয়া একটি ভয়াবহ রোগ। সুতরাং যে কোন উপায়েই হউক আমাদের এর থেকে বেঁচে থাকতে হবে এটাই বড় কথা। তার জন্য অর্থাৎ, ম্যালেরিয়া জ্বরের প্রতিকারের জন্য নিচের পদক্ষেপগুলো অনুসরণ করা যেতে পারে।
- আমাদের মধ্যে কারো ম্যালেরিয়া জ্বরের লক্ষণ প্রকাশ পেলে তাকে তৎক্ষণাৎ চিকিৎসকের কাছে নিয়ে যেতে হবে। ম্যালেরিয়া জ্বরের লক্ষণ, প্রতিকার ও চিকিৎসার বিষয়টি বিবেচনায় নিয়ে চিকিৎসক ম্যালেরিয়া পরীক্ষা করে যদি এই রোগটি ধরা পড়ে তো তাকে ম্যালেরিয়া রোগের ঔষধ দিবে। এভাবে ম্যালেরিয়া রোগের প্রতিকার করা যেতে পারে।
- এই রোগে আক্রান্ত ব্যক্তিকে পর্যাপ্ত পরিমাণ বিশ্রামের ব্যবস্থা করে দিতে হবে। সেই সাথে তাকে পুষ্টিকর খাবার খাওয়াতে হবে।
- শরীরের তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রনে রাখার জন্য ঠান্ডা পানি পান করতে হবে। আর সেই সাথে মাঝে মাঝে শরীরকে ভেজা কাপড় দিয়ে মুছে নিতে হবে।
- ম্যালেরিয়া রোগে আক্রান্ত ব্যক্তির বাসা-বাড়ি সুরক্ষিত রাখার জন্য প্রয়োজনীয় স্প্রে ব্যবহার করতে হবে।
অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url